কক্সবংলা ডটকম(২৩ মে) :: বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম খুনের ঘটনায় পরতে পরতে রহস্য। তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। কীভাবে খুন করা হয় তাঁকে, তা নিয়ে ক্রমশ জমাট বাঁধছে রহস্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৩ মে নিউটাউনের আবাসনেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় তাঁকে। খুনের পর টুকরো টুকরো করে কাটা হয় দেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিন ধরে দেহাংশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। দেহের কিছু অংশ ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা রয়েছে বলেই খবর। এমনকি ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের অনুমান, প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেই দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছে। তবে দেহাংশ কারা ফেলে রেখেছে, কোথায় ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিখোঁজের পর থেকেই শঙ্কা ছিল আনোয়ারুল আজিম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। আকার ইঙ্গিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন সূত্র থেকে এমনটি বলা হয়েছিল। পরিবার-আত্মীয়স্বজন ও তার অনুসারীরাও কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিলেন। দুই দেশের পুলিশের মধ্যেও তথ্য চালাচালি চলছিল। সবকিছু ছাপিয়ে বুধবার খবর এলো ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আর বেঁচে নাই।
তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর একে একে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, পরিকল্পিতভাবে আজিমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এমপি’র মরদেহ এখনো উদ্ধার হয়নি।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কেন, কী কারণে পার্শ্ববর্তী দেশে নিয়ে তাঁকে খুন করা হলো, তার স্পষ্ট উত্তর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে নেই। তবে বেশ কিছু সন্দেহ সামনে রেখে তদন্ত করছেন বাংলাদেশ ও ভারতীয় গোয়েন্দারা। তবে এখন পর্যন্ত স্বর্ণ চোরাচালানের বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে আজীমকে হত্যা করা হয়েছে ধারণা করা হচ্ছে। আজীম ও তাঁর বন্ধু ঠিকাদার আখতারুজ্জামান শাহীনের এপার-ওপারে যৌথ ব্যবসা আছে। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শাহীনের সঙ্গে আজীমের অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঠিকাদারির পাশাপাশি হুন্ডির কারবার রয়েছে ওই বন্ধুর।
হত্যা মিশনে শাহীন তাঁর বেয়াই চরমপন্থি নেতা আখতারুজ্জামানকে ব্যবহার করেছে। ব্যবসায়িক বিরোধের বাইরে কয়েক বছর আগে চুয়াডাঙ্গায় সাইফুল হত্যা এবং আরও এক চরমপন্থি নেতার খুনের প্রতিশোধ নিতে আজীমকে সরিয়ে দেওয়া হলো কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো স্বার্থান্বেষী গ্রুপ একত্রিত হয়ে গোপন ছকে এই আজীম হত্যার মিশনে সংশ্লিষ্ট কিনা, সেটি তদন্ত করছেন গোয়েন্দারা। ঝিনাইদহকেন্দ্রিক আজীমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অনেক দূর থেকে হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত– আছে সেই আলোচনা। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংসদ-সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক হলেন আক্তারুজ্জামান শাহিন। বাংলাদেশের একটি বাহিনীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। তিনি ইতোমধ্যে দুবাই চলে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক শাহিনের ভাই শহিদুজ্জামান সেলিম কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র। ঘটনার পর দেশ ছাড়ার আগে শাহিন তার প্রাডো গাড়ি অপেক্ষাকৃত কম দামে (২৭ লাখ) দ্রুত বিক্রি করে দেন।
শাহিনের সহযোগী হিসাবে এখন পর্যন্ত যাদের নাম বেরিয়ে এসেছে তারা হলেন-শাহিনের বান্ধবী সেলেটি রহমান, সৈয়দ আমানুল্লাহ, শাহিনের চাচাতো ভাই টিটু, ভারতীয় নাগরিক জিহাদ ওরফে জাহিদ, সিয়াম প্রমুখ। খুনের ঘটনায় পুলিশ যাদের সন্দেহ করছে, তাদের মধ্যে দুজনের পাসপোর্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। পাসপোর্টগুলো এখন ডিবির হাতে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের মধ্যে আমানুল্লাহসহ কয়েকজন পুলিশের হেফাজতে আছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি) জানায়, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসাবে ৩০ এপ্রিল আক্তারুজ্জামান শাহিন, তার বান্ধবী সেলেটি রহমান ও সৈয়দ আমানুল্লাহ কলকাতায় যান। আমানুল্লাহ হলেন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। একাধিক হত্যা মামলার আসামি তিনি। সম্পর্কে শাহিনের বেয়াই। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি দুজন লোক সংগ্রহ করে দেন। ওই দুজনকে ভারতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টও করে দেন তিনি।
ডিবি সূত্র জানায়, পরিকল্পনার অংশ হিসাবে কলকাতা নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনে বিলাসবহুল একটি অ্যাপার্টমেন্ট (ডুপ্লেক্স বাসা) ভাড়া নেওয়া হয় শাহিনের নামে। কয়েকদিন ওই অ্যাপার্টমেন্টে থাকার পর ১০ মে তিনি (শাহিন) দেশে ফেরেন। তিনি দেশে ফিরলেও আমানুল্লাহ ও সেলেটিকে সেখানে রেখে আসা হয়।
ডিবি আরও জানায়, সংসদ-সদস্য আনার যেদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, সেদিন তাকে বাংলাদেশি এক লোক সাদা গাড়িতে করে রিসিভ করেন। ওই গাড়িটি নিউটাউনের কাছাকাছি একটি বাসার সামনে গিয়ে ৮-১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে। পরে সেখানে একটি লাল গাড়ি আসে। ওই গাড়িতে ছিলেন ভারতীয় চালক এবং বাংলাদেশি সৈয়দ আমানুল্লাহ। গাড়িটি প্রবেশ করে শাহিনের ভাড়া করা বাসায়। হত্যাকাণ্ডের পর দুই ঘাতক কলকাতা থেকে এসে শাহিনের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাটে আশ্রয় নেন। ওই বাসায় নিয়মিত মদের আসর বসত।
ডিবি পুলিশকে সৈয়দ আমানুল্লাহ জানিয়েছেন সংসদ-সদস্য আনারকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর আনারের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চারটি ট্রলিতে নেওয়া হয়। পরে একেকজন একেকটি ট্রলি নিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে যান। তবে আমানুল্লাহ ও জিহাদ দুজনে মিলে একটি ট্রলি নেন।
ওই ট্রলিটি নিয়ে তারা নিউটাউনে একটি পাবলিক টয়লেটের পাশে সিয়ামের হাতে দেন। পরে আমানুল্লাহ সেখান থেকে অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন। সিয়াম ও জিহাদ ট্রলি ব্যাগটি নিয়ে অন্যত্র চলে যান। আমানুল্লাহ অ্যাপার্টমেন্টে যাওয়ার পর সেলেটি রহমান তাকে প্রশ্ন করেন, রুমে এত গন্ধ কেন? আমার বমি আসছে।তখন আমানুল্লাহ বলেন, জিহাদের বমি ও পাতলা পায়খানা হয়েছিল। বাথরুমে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হয়েছে। এজন্য গন্ধ আসছে। ওইদিন এবং পরদিন আমানুল্লাহ ও সেলেটি রহমান ওই ফ্ল্যাটে থাকেন। ১৫ মে তারা দেশে ফেরেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আজীমের পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার তিনি এমপি নির্বাচিত হন। তবে তাঁর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এক সময় দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সীমান্তপথে অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারের হোতা হিসেবেও পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। আজীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র-বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
২০০৭ সালে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুর এলাকা থেকে ১২ কেজি ৯৫০ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি)। চোরাকারবারিরা জানতে পারে, সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম এই চালান ধরিয়ে দিয়েছেন। এর পর তাঁকে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় আজীমসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তবে ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে রাজনৈতিক বিবেচনায় আনারসহ বেশ কয়েকজন মামলা থেকে অব্যাহতি পান। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে আজীমের বিরুদ্ধে থাকা অন্য মামলাগুলো থেকেও তিনি অব্যাহতি পেতে শুরু করেন। আর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বেশির ভাগ মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন তিনি।
এলাকায় আলোচনা আছে– অবৈধ কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে যান এমপি আজীম। ১৯৯১ সালে ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর পর কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কাউন্সিলরের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যা বলা হয়
জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ২২ মার্চের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরপর দুইবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে দলাদলিসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আধিপত্য বিস্তারে পেশিশক্তি ব্যবহার করেন আজীম। এ কাজে তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যসহ বিরোধীদলীয় এবং বিতর্কিত নেতাকর্মী ব্যবহার করেছেন। তিনি একক আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী এবং জনপ্রতিনিধিদের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দিয়ে দলে ভিড়িয়েছেন। দলের ত্যাগী ও একনিষ্ঠ নেতাকর্মীরা কমিটি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এমপির সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীর কোন্দল ও বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এমপি আজীমের ছত্রছায়ায় উপজেলায় টেন্ডারবাজিসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আধিপত্য বিস্তার করছেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিবলী নোমানী এবং তাঁর ভাই পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মন্টু। তাদের বাবা প্রয়াত মোমিন মৌলভী ছিলেন চিহ্নিত রাজাকার। শিবলী ও তাঁর ভাই কালীগঞ্জ পৌর বিএনপির নেতা ছিলেন। ২০০৮ সালে আজীমের নেতৃত্বে তাঁরা আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও খুলনা বিভাগীয় ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদকে পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদ দেন আনার। উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান লালকে নিজের ঠিকাদারি কাজে ব্যবহার করছেন। ছাত্রশিবির ও ইউনিয়ন যুবদলের দুই নেতাকেও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদ দিয়েছেন।
ভারতে খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নাম এসেছে বাংলাদেশি আকতারুজ্জামানের। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। এমপি আনার যে বাসায় খুন হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে ওই বাসাটি আকতারুজ্জামানই ভাড়া নিয়েছিলেন।
আনার ভারতে অবস্থানকালে আকতারুজ্জামানও সেখানে ছিলেন। যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন বলে ধারণা করা হচ্ছে সেই ফ্ল্যাটে আকতারুজ্জামানও ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী আকতারুজ্জামান ঝিনাইদহের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
আনার খুনের পর তিনি নেপাল, দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। গত ২০শে মে ভিসতারা এয়ারে দিল্লি থেকে আকতারুজ্জামান নেপালের কাঠমান্ডু চলে যান। পরের দিন ফ্লাই দুবাইয়ে করে তিনি দুবাই চলে যান। তার পরবর্তী গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র বলে জানা গেছে।
ওদিকে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি’র প্রধান জানিয়েছেন, পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার রায়ের।
সন্দ্বীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আকতারুজ্জামান। আকতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিম আনারের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসা করাতে কলকাতায় আসেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। তার পর পরিবারের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করেননি তিনি। ১৪ মে থেকে তাঁর ফোনও বন্ধ ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, শেষবার তাঁর মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশে পাওয়া গিয়েছিল। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে আনোয়ারুলের পরিবার যোগাযোগ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর যোগাযোগ করে দিল্লি ও কলকাতায় বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে। ওই সাংসদের খোঁজে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বিধাননগর পুলিশ। তদন্তে নেমে একাধিক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সেখান থেকেই পুলিশ সূত্রে বুধবার দাবি করা হয়, খুন করা হয়ে থাকতে পারে সাংসদকে।
Posted ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta